শ্রীলঙ্কা থেকে তিনটি শিক্ষা নিতে পারে বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ হান্স টিমার বলেছেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থানে নেই। কারণ দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম এবং তা মাত্র জিডিপির ১৭ শতাংশের মতো। হ্যান্স টিমার বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থানে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশের পুরো ঋণের ৭০ শতাংশই বিশ্বব্যাংকের মতো বহুজাতিক আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। তাই শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের বেশ পার্থক্য আছে।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে সংস্থাটির ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক আপডেট’ প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে টিমার শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থানে আছে উল্লেখ করে এ কথা বলেন। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। টিমার আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দুই কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্থনীতি ধসে পড়ার পর মঙ্গলবার দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে বিদেশি ঋণ পরিশোধে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করে। তবে শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ টিমার।

শ্রীলঙ্কার চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাংলাদেশ তিন বিষয়ে শিক্ষা নিতে পারে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। এগুলো হলো ঋণ ব্যবস্থাপনায় সতর্কতা; বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহারে সতর্ক হওয়া এবং সরকারি খরচে মিতব্যয়ীতা। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বেশি ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। মালদ্বীপের ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, ভুটানের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, নেপালের ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, পাকিস্তানে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, ২ বছরের করোনাভাইরাস মহামারি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর রেখেছে বাংলাদেশ।